চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম সিটিতে জেএম সেন হলের পূজামণ্ডপে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও গোলমাল সৃষ্টির অভিযোগে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ও আজ শুক্রবার সকালে মহানগর এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয় বলে দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান নগর পুলিশের উপ কমিশনার ও সিএমপি মুখপাত্র রইস উদ্দিন।
তিনি জানান, ওই দুজনকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এটা পরিকল্পিত কোনো ঘটনা কি না, সেটা জানার চেষ্টা চলছে। এই ঘটনার সাথে যারই সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, তাঁকেই আইনের আওতায় আনা হবে। কোতোয়ালি থানায় মামলা হবে।
আটক দুজন হলেন–মাদ্রাসা শিক্ষক শহিদুল করিম (৪২) ও আরেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নুরুল ইসলাম (৩৪)। গান গাওয়া বাকিদেরও আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উদযাপন অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও গোলমাল সৃষ্টির ঘটনায় ওই দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের গাওয়া একটি গানের ভাষার শব্দ চয়ন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার উপস্থাপক ও পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্ত চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্যদের মঞ্চে ডাকেন। মঞ্চে ওঠেন ৬-৭ জন তরুণ। তাঁরা সেখানে দুটি গান পরিবেশন করেন।
প্রথম পরিবেশন করেন, ‘গেরামের নওজোয়ান, হিন্দু মুসলান’ গানটি। এর পর তাঁরা ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম/ বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’ ইসলামি গানটি পরিবেশন করলে উপস্থিত সকলে হকচকিয়ে যান।
এই গানের একটা লাইন ছিল-‘বিশ্ব মানুষের মুক্তির শেষ পথ বিপ্লব, ইসলামী বিপ্লব’। গানটির গীতিকার চৌধুরী আবদুল হালিম। পরে উপস্থিত নেতারা ও কয়েকজন বিএনপি নেতার হস্তক্ষেপে তাঁরা মঞ্চ ত্যাগ করেন।
চট্টগ্রামে পূজামঞ্চে ‘ইসলামি গান’, আসলে কী ঘটেছিলচট্টগ্রামে পূজামঞ্চে ‘ইসলামি গান’, আসলে কী ঘটেছিল
সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে এবং এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে রাতেই চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা পূজা মণ্ডপে ছুটে যান। তাঁরা পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সাথে বৈঠক করেন।
মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি আশীষ কুমার ভট্টাচার্য জানান, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমিকে মঞ্চে ডেকে নেওয়ার অভিযোগে অনুষ্ঠান পরিচালক ও কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি সজল দত্তসহ যাঁরা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আয়ার দাবি জানান।